রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২


২০০ কোটি টাকা পাচার

চীনা অ্যাপের ফাঁদে দেড় হাজার মানুষ

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশিত:২৫ নভেম্বর ২০২৩, ২০:০৬

চক্রের ১৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

চক্রের ১৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপনে সহজে লোনের সুযোগ এবং কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন না করেই ঘরে বসে অনেক টাকা আয়ের প্রলোভনের ফাঁদ পেতে চীনা নাগরিকসহ একটি চক্র দুই বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা হাতিয়েছে। এসব টাকা ইতোমধ্যে পাচার হয়ে চীনে চলে গেছে।

রাজধানীর হাতিরঝিল ও কাফরুল থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে নেমে এমন ভয়াবহ তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এ ঘটনায় চক্রটির ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই চক্রের প্রধান ঝ্যাং জি ঝাহ্যাং (৬০) নামে এক চীনা নাগরিক। অভিযানের সময়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সিমে ২৯টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের তথ্য উদ্ধার করেছে ডিবি।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

ডিবি কর্মকর্তা জানান, গত ছয় মাসে এসব মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পাচার করা হয়েছে। সে হিসেবে গত দুই বছরে অন্তত দুশো কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করেছে।

দেশে এখন পর্যন্ত এই চক্রের হাতে অন্তত দেড় হাজার মানুষ প্রতারিত হয়েছে। অ্যাপটি চীনা নাগরিকদের তৈরি। এটির সার্ভার সিঙ্গাপুরে। আর কলসেন্টার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। পাকিস্তানি নাম্বার দিয়ে বাংলাদেশিদের কল করা হয়। আর বাংলাদেশি নাম্বার ব্যবহার করে ভারতীয়দের কল করা হতো।

চক্রটি অল্প টাকা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো জানিয়ে হারুন বলেন, এভাবে তারা এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকেই আট লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই চক্রের সাথে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। তারা আত্মগোপনে আছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান রয়েছে।

লোন অ্যাপ ডাউনলোড করলেই তথ্য বেহাত

চক্রটির উদ্ভাবনকৃত লোন অ্যাপটি চালু করলেই ব্যবহারকারীর মোবাইলে থাকা সব তথ্য সংশ্লিষ্টদের কাছে চলে যেত৷ ফলে এসব তথ্য দিয়ে চলত ব্ল্যাকমেইলিং।

হারুন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে সহজে ফোন দেওয়ার নামে ফাঁদে পা দিয়ে কেউ চীনা অ্যাপ ডাউনলোড করলেই বিপদে পড়তেন। অ্যাপ ডাউনলোড করার পরেই মোবাইলের ছবি, ভিডিও, কন্ট্রাক্ট লিস্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য চক্রের হাতে চলে যায়। এরপর চক্রের সদস্যরা সেগুলো ব্যবহার করে লোন নেওয়া ভুক্তভোগীকে এসব ছবি-ভিডিও ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করে। প্রথমে সরাসরি ভুক্তভোগীকে নানাভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। তাকে না পেলে বাবা-মাসহ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতজনদের নাম্বারে আপত্তিকর বিভিন্ন ছবি তৈরি করে পাঠাতো। একইভাবে মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে ঘরে বসে দিনে আটশ থেকে দুই হাজার টাকা আয়ের নানা প্রলোভন দেখাত। এমন এসএমএস পাঠিয়ে বিভিন্নজনকে প্রলোভন দেখানো হতো। আর এই প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

হারুন আরও বলেন, পাশের দেশে এসব অ্যাপস থেকে ঋণ নিয়ে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে ৬০ জনেরও বেশি আত্মহত্যা করেছেন। বাংলাদেশে কেউ আত্মহত্যা করেছে কি না সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। এই চক্রের হাতে কেউ প্রতারিত হলে ভুক্তভোগী মামলা করতে পারেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:০৭ ভোর
যোহর ১২:০৫ দুপুর
আছর ০৪:৪২ বিকেল
মাগরিব ০৬.৪৪ সন্ধ্যা
এশা ০৮:৪ রাত

রবিবার ৩ আগস্ট ২০২৫