রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
মেয়াদি আমানত কিংবা সঞ্চয়পত্রে ১০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে হলে এখন থেকে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রেও।
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, এসব আর্থিক লেনদেনে যুক্ত হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সর্বশেষ অর্থবছরের রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে। এর বাইরে মোট ২৪টি ব্যাংকিং ও প্রশাসনিক সেবায় রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সম্প্রতি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এই সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সব তফসিলি ব্যাংককে সার্কুলারের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যেসব গ্রাহক নির্দিষ্ট আর্থিক সেবা গ্রহণ করবেন, তাদের রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট সেবা দেওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত ও ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে অন্যান্য লেনদেন বা সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে এই বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
এছাড়া, বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কেনা, কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রফতানি নিবন্ধন নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স ও পেশাজীবী লাইসেন্স নবায়ন, জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেবার ক্ষেত্রেও রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এমনকি ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র, নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট, স্কুলে শিশুর ভর্তি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়ার মতো ক্ষেত্রেও রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সরকার বলছে, করজালের পরিধি বাড়ানো, রাজস্ব আদায়ে গতি আনা এবং আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির আলোকে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে, যাতে দেশীয় আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। সরকার আশা করছে, নতুন নিয়মের ফলে কর সচেতনতা বাড়বে এবং অধিক মানুষ রিটার্ন দাখিলে আগ্রহী হবেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)