বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্য নীতি ও একচ্ছত্র শক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমতের বিরোধ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলছেন, ‘বিশ্ব আর কোনো সম্রাট চায় না।’
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক হুমকি ও বাণিজ্য নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার এমন মন্তব্য করেছেন লুলা। ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক আরোপের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় লুলার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে এক জোরালো বার্তা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। মঙ্গলবার এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
স্থানীয় সময় রোববার রাতে ব্রিকস দেশগুলোর ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরোধিতা করবে, তাদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধমূলক’ শুল্ক আরোপ করা হবে। এরপর সোমবার ১৪টি দেশের ওপর নতুন শুল্কের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, আপাতত ব্রিকসের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা নেই, যতক্ষণ না কোনো দেশ এমন পদক্ষেপ নেয় যা যুক্তরাষ্ট্র ‘বিরুদ্ধাচরণ’ হিসাবে বিবেচনা করে।
ব্রিকস সম্মেলনে লুলা সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশ্ব বদলে গেছে, আর আমরা কোনো সম্রাটের অধীনে থাকতে চাই না। তিনি জানিয়েছেন, ব্রিকসের দেশগুলো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নতুন বিকল্প খুঁজছে। যা হয়তো অনেকের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লুলা আরও বলেছেন, ‘বৈশ্বিক বাণিজ্যে মার্কিন ডলারের আধিপত্য কমানোর প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি। আমাদের এমন একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে, যেখানে বাণিজ্য লেনদেনগুলো সবসময় ডলারের ওপর নির্ভরশীল থাকবে না।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘এ পরিবর্তন ধীরে ধীরে এবং সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর যৌথ আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে।’
ট্রাম্পের হুমকির জবাবে অন্যান্য ব্রিকস সদস্যরাও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, তারা কারও সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান না। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, ব্রিকস এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, শুল্ক আরোপ চাপ সৃষ্টি ও বাধ্যবাধকতার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। ব্রিকস সব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পক্ষে। রাশিয়া বলেছে, ব্রিকসের সঙ্গে রাশিয়ার অংশীদারিত্ব কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়, বরং সাধারণ বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)