শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের পরিবেশগত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের আশঙ্কা, বর্ষণ-বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে যদি শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে একসময় মানচিত্র থেকে হিমাচল হারিয়ে যাবে।
গত ২৮ জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মাধবনের বেঞ্চ হিমাচলের পরিবেশগত অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, “হিমাচল রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তরোত্তর খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে রাজ্যটিতে, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তীব্র পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা। যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে মানচিত্র থেকে হিমাচলের চিরতরে মুছে যাওয়ার দিন খুব বেশি দূরে নয়।”
গত বছর রাজ্যের বেশ কিছু এলাকাকে ‘সংরক্ষিত সবুজ এলাকা’ ঘোষণা করে সেসব অঞ্চলে গাছ কাটা, পাহাড় কাটা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হিমাচল হাইকোর্ট। কিছুদিন আগে হাইকোর্টের সেই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। সেই পিটিশনের শুনানি ছিল ২৮ জুলাই।
শুনানির শুরুর দিনই বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মাধবনের বেঞ্চ জানান, তারা হিমাচল হাইকোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ করতে ইচ্ছুক তো ননই, উপরন্তু রাজ্যের কোন কোন জায়গায় নির্মাণ কাজ করা যাবে এবং কোন এলাকা থেকে কী কী প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা যাবে— সে সম্পর্কিত একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনার পক্ষপাতী।
বিচারপতি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মাধবনের বেঞ্চ বলেন, “হিমাচল প্রদেশের বিপর্যয়কর অবস্থার জন্য কেবল প্রকৃতি একা দায়ী নয়… সুপ্রিম কোর্ট মনে করে যে এক্ষেত্রে প্রকৃতির চেয়ে মানুষের দায় বেশি। প্রতি বছর সেখানে ভূমিধস হচ্ছে। বাড়ি-ঘর, সড়ক, ভবন ধ্বংস হচ্ছে। আমরা যদি বিস্তৃতভাবে এর কারণ অনুসন্ধান করি, তাহলে দেখা যাবে এসব ভূমিধসের জন্য মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারন দায়ী।”
“রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রকে আমরা এটাই বোঝাতে চাইছি যে, শুধু রাজস্ব আয়ই সব কিছু নয়। পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্রের বিনিময়ে রাজস্ব আয় করা ঠিক নয়। যদি এই পরিস্থিতি আগামী দিনেও চলতে থাকে, তাহলে হিমাচল ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের প্রার্থনা, এমন দিন যেন না আসে।”
সূত্র : এনডিটিভি
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)