বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২


বলেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তা

‘আরাকানে সংঘাত থামলেই রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি হবে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত:২৬ আগষ্ট ২০২৫, ১৬:১৪

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সংঘাত থামলেই বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে আসার পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)-এর মিয়ানমার শাখার পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড।

আরাকানে সংঘাত থামানোর জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বকে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডানফোর্ড বলেন, “(বাংলাদেশে আশ্রিত) রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে আসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা আরকান রাজ্যের চলমান সংঘাত। সংঘাত থামলেই তাদের ফিরে আসার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। আমরা আন্তর্জাতিক বিশ্বকে এজন্য জোরদার কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর আহ্বান জানাতে চাই।”

সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য দাতা দেশগুলোর কাছে ৩ কোটি ডলার সহায়তাও চেয়েছেন তিনি। এনএইচকে-কে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন

মিয়ানমার এবং মিয়ানমারের বাইরে বসবাসরত রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর লোকজনের জন্য খাদ্য সহায়তা বাবদ দাতা দেশগুলোর কাছে ৩ কোটি ডলার চেয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)। জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন ডব্লিউএফপির মিয়ানমার শাখার পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড।

সাক্ষাৎকারে এনএইচকে-কে তিনি বলেন, “এখানে রোহিঙ্গাদের অবস্থা ভয়াবহ। তাদের ছয় মাসের খোরাকির জন্য এই ৩ কোটি ডলার আমরা চাইছি। যদি অর্থ না পাই, তাহলে রোহিঙ্গারা না খেয়ে থাকবে, তাদের মধ্যে অপুষ্টির হারও অনেক বাড়বে।”

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে একযোগে বোমা হামলা ঘটায় সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। সেই হামলার প্রতিক্রিয়ায় আরাকানের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ভয়াবহ অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

সেনা সদস্যদের নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের মুখে টিকতে না পেরে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে কক্সবাজারের টেকনাফ জেলার কুতুপালংয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা সংস্থার পক্ষ থেকে তাদেরকে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান শুরু হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এই ব্যবস্থাই চলে আসছে। বর্তমানে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

শুরুর দিকে এই রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার। পরে এক সময় এই দায়িত্ব নেয় জাতিসংঘ। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গাদের সবাই জাতিসংঘ থেকে খাদ্য সহায়তা পেয়ে থাকেন।

রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার বিষয়টি তদারক করে ডব্লিউএফপি; আর ডব্লিউএফপির তহবিলে এতদিন সবচেয়ে বেশি অর্থ সহায়তা দিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। বস্তুত, এই সংস্থার তহবিলের ৮০ শতাংশই আসত যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা প্রদান সংস্থা ইউএসএইড থেকে।

তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি সহায়তা স্থগিতের আদেশের পর থেকে ইউএসএইডের সেই তহবিল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারে সংঘাত তীব্র হওয়ায় গত কয়েক মাসে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন নতুন প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:২৯ ভোর
যোহর ১১:৫৪ দুপুর
আছর ০৪:১৯ বিকেল
মাগরিব ০৬.০৫ সন্ধ্যা
এশা ০৭:১৮ রাত

বুধবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫