বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
মাত্র দুই দিন আগেও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে আজ চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন না তিনি।
তিন নেতার হাসিমুখে আলাপের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভাইরাল হয়েছিল, যাকে কেউ কেউ ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভরশীল নয় এমন একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার সূচনা হিসেবেও দেখেছিলেন। তাই, অনেকেরই আশা করা স্বাভাবিক ছিল যে মোদি আবারও শি ও পুতিনের সাথে মঞ্চ ভাগাভাগি করবেন। কিন্তু বাস্তবতা আরও জটিল।
রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে দিল্লির অস্বীকৃতির জন্য ২৫ শতাংশ জরিমানাসহ ভারতের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ দিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনাকে আরও প্রয়োজনীয় করে তোলে। কিন্তু এশিয়ার শক্তিধর এই দুই দেশের এখনো অনেক অন্তর্নিহিত সমস্যা সমাধানের বাকি রয়েছে। তাদের একে অপরের বিরুদ্ধে এখনো অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক কার্যকর আছে। ভারত চীনের সাথে চলমান ৯৯ বিলিয়ন ডলার (৭৩ বিলিয়ন পাউন্ড) বাণিজ্য ঘাটতি সম্পর্কেও সতর্ক।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় তাদের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষের পর ভারতের জনগণের মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে রোষ তৈরি হয়। ফলে ভারত ও চীনের একে অপরের সামরিক শক্তির প্রশংসা করার মতো সময় এখনো আসেনি।
ভারত বরং তার সাম্প্রতিক ক্ষত মেটানোর চেষ্টা করছে, যেখানে কয়েকদিন আগেই দিল্লি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে গতমে মাসে সংঘর্ষে পাকিস্তান যে অস্ত্র ব্যবহার করেছে তার বেশিরভাগই বেইজিং থেকে এসেছে।
‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত ট্রাম্পের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপের পর দিল্লি-বেইজিং সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি ভারতীয় গণমাধ্যমে উঠে আসে। তবে চীনে সামরিক কুচকাওয়াজে যোগদান করা না করার পেছনে মোদির নিজস্ব হিসাব-নিকাশ রয়েছে বলেই ভাবা হচ্ছে।
এদিকে চীনের বিজয় দিবসের সামরিক প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো শি জিনপিংয়ের সাথে একত্রে দেখা গেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে।
ছয় বছর পর চীন তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। একই সাথে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৮০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের আনুষ্ঠানিক আত্মসমপর্ণকেও উদযাপন করা হচ্ছে।
এই অনুষ্ঠানে আরো অনেক বিশ্বনেতা অংশ নিয়েছেন, যাদের মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট নোয়াং কোয়াং, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিস এবং জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট ইমারসন মানানগায়া।বিবিসি বাংলা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)