শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
গ্রীষ্ম এলেই বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে আমের সুবাস। হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ফজলি - নানান জাতের আম যেন আমাদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এই মৌসুমে কিছু মানুষ চাইলেও মনের খায়েশ মিটিয়ে আম খেতে পারেন না, তার প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। তাদের ধারণা আম খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাবে। আসলেই কী আম খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে?
কেউ বলেন, ডায়াবেটিসে আম একেবারে নিষিদ্ধ। আবার কেউ বিশ্বাস করেন, আম খেলে ডায়াবেটিসই সেরে যায়! বাস্তবতা অবশ্য এর মাঝামাঝি।
এক্ষেত্রে মুম্বাইয়ের শীর্ষস্থানীয় ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. রাহুল বাক্সি জানান, আমের মৌসুমে তার কাছে যেসব রোগী আসেন, তাদের বেশিরভাগেরই সবচেয়ে কমন প্রশ্ন থাকে, তারা আম খেতে পারবেন কিনা। তিনি জানান, আমের মৌসুম শেষে অনেক রোগীর শরীরের চিনির লেভেল বেড়ে যায়। কারণ তারা কোনো রকম নিয়মের মধ্যে না থেকেই আম খান।
তাই প্রশ্নটা শুধু আম খাওয়া নয়, কীভাবে, কতটা এবং কখন খাওয়া উচিত- সেই নিয়ম জানা জরুরি। সম্প্রতি দুটি ভারতীয় গবেষণা আম খেলে ডায়াবেটিস বাড়তে পারে- এমন প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিমিত ও পরিকল্পিতভাবে আম খাওয়া টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং উপকারী হতে পারে।
ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক পাইলট স্টাডিতে দেখা গেছে, সফেদা, দশেরি ও ল্যাংড়া জাতের আম খাওয়ার পর রক্তে যতটা চিনি বাড়ে, তা রুটি খাওয়ার চেয়ে কম বা একই রকম।
৩৫ জন রোগীর ওপর ৮ সপ্তাহ ধরে আরেকটি গবেষণা করা হয়। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে রুটির পরিবর্তে ২৫০ গ্রাম আম খেয়ে ওই রোগীরা রক্তে শর্করা, ইনসুলিন নেওয়ার সমস্যা, ওজন ও কোমরের মাপে উন্নতি দেখিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বলছেন, এই ফল খাওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি- একটি ছোট আমে আছে প্রায় ১৮০ ক্যালোরি। তাই এটি প্রতিদিনের ক্যালোরির হিসাব করে খেতে হবে। গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকলে, দিনে একবার বা দুইবার অর্ধেক আম খাওয়া যেতে পারে। তবে তা খাবারের মাঝে খাওয়া ভালো, ডেজার্ট হিসেবে নয়।
তাই আম খেলেই যে বেড়ে যাবে ডায়াবেটিস, এমন ভাবনা ছেড়ে দিয়ে পরিমিতি, সচেতনতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে আম হতে পারে আপনার গ্রীষ্মকালীন আনন্দের অংশ। তাই গ্রীষ্মে আম খান, কিন্তু জেনে-বুঝে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)