বৃহঃস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
গত এক বছরে বেড়েছে দেশের দারিদ্র হার। ২০২২ সালের বিবিএস-এর হিসেবে দেশে অতিদারিদ্র্য ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া সাধারণ দারিদ্র্য হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও পিপিআরসির যৌথভাবে পরিচালিত জরিপে উঠে এসেছে এমন চিত্র। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও-এর এলজিইডি মিলনায়তনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এতে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম শ্রেণির মানুষের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। তারা সংসার চালাচ্ছেন ধার-দেনা করে। তবে উচ্চবৃত্তের আয়ের চেয়ে ব্যয় কম। এছাড়া বেড়েছে বৈষম্য, হচ্ছে হয়রানি। গত সরকারের আমলেও ঘুস দিতে হতো এখনো দিতে হয়। তবে সার্বিকভাবে ঘুস দেওয়া কিছুটা কমলেও বর্তমানে কোনো কাজ করতে গিয়ে ঝামেলা এড়াতে বেশি ঘুস দিচ্ছে মানুষ। আওয়ামী লীগের সময়ে যেটি ছিল ২১ দশমিক ৫১ শতাংশ, সেটি এখন বেড়ে হয়েছে ৩০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গড়ে একটি পরিবারের মাসিক আয় ৩২ হাজার ৬৮৫ টাকা এবং মাসিক ব্যয় ৩২ হাজার ৬১৫ টাকা। কিন্তু এর মধ্যে অনেক ভাগ রয়েছে৷ যেমন- নিচের দিকের ১০ শতাংশ মানুষের মাসিক আয় ৮ হাজার ৪৭৭ টাকা আর ব্যয় ১২ হাজার ২৯৪ টাকা। এছাড়া মধ্যবিত্ত ৪০ শতাংশ মানুষের আয় ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা আর ব্যয় হয় ২৯ হাজার ৭২৭ টাকা।
তবে উচ্চস্তরে থাকা ১০ শতাংশ মানুষের আয় ১ লাখ ৯ হাজার ৩৯০ টাকা, যাদের ব্যয় হয় ১ লাখ ১ হাজার ১৬৩ টাকা।
প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ মানুষের মধ্যে ১২ দশমিক ২ শতাংশ সপ্তাহে অন্তত এক বেলা না খেয়ে থাকে। এছাড়া ৯ শতাংশ মানুষ মাসে অন্তত একদিন না খেয়ে থেকেছে। নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।
দেশে স্মার্ট ফোনের ব্যবহার বেড়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তবে ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ স্মার্ট ফোন ব্যবহার হয় শুধু গেম বা বিনোদনের কাজে। দেশে পরিচালিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ পায় যারা গরিব নয়। এছাড়া যারা গরিব নয় তবে যেকোনো সময় গরিব হতে পারে এমন ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ সরকারি বিভিন্ন ভাতা পান। এই দুটি বিষয় মেলালে দেখা যায় সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মধ্যে ৪৪ দশমিক ৩০ শতাংশই সঠিক মানুষ পাচ্ছেন না।
এছাড়া পরিবারগুলোর মধ্যে গড়ে ২৭ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে এবং পরিবারগুলোতে সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবহারও বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানুষের প্রত্যাশা হলো, অর্থনৈনিক উন্নয়ন, আইন শৃঙ্খলার উন্নয়ন এবং দারিদ্র বিমোচন। আর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা হলো- দুর্নীতি দমন, সুশাসন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
ক্রনিক রোগের কারণে পরিবারগুলো দরিদ্র হচ্ছে জানিয়ে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জরিপে অংশ নেওয়া সব পরিবারেই একজন বা একাধিক ক্রনিক রোগী রয়েছেন। এজন্য নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে ক্রনিক রোগীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তায় আলাদা নতুন কর্মসূচি চালু করা দরকার।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)