সোমবার, ২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
আগামী ২ জুন ঘোষণা করা হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বেতার ও টেলিভিশনে এ বাজেট ঘোষণা করবেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায় ও ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় বেশ কিছু পণ্য শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ বা কমানো হতে পারে। যার প্রভাবে বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমতে বা বাড়তে পারে। যার মধ্যে রয়েছে—এলএনজি, ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাটারি, রড, বাস, প্লাস্টিক পণ্য, মাটির ও পাতার তৈরি জিনিসপত্র ইত্যাদি।
এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার
প্রস্তাবিত বাজেটে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার হতে যাচ্ছে। বর্তমানে এলএনজি আমদানির সময় ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়। আবার গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রির সময় ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ উৎসে কর দিতে হয়। এছাড়া বাইরেও এলএনজি মার্জিনের বিল পরিশোধের সময় গ্যাস বিতরণ সংস্থার কাছ থেকে ৫ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়।
জ্বালানি তেলেও শুল্ক কমছে
ক্রুড ফুয়েল অয়েল বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওপর শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে এবং অন্যান্য জ্বালানি আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমানো হতে পারে। এর ফলে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে। এছাড়া স্থানীয় শিল্প যেমন টায়ার, টিউব, ব্রেক সু, ব্রেক প্যাড, মার্বেল ও গ্রানাইট উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানির ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব থাকতে পারে প্রস্তাবিত বাজেট।
বাস আমদানিতে শুল্ক হ্রাস
১৬ থেকে ৪০ আসনের বাস আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ, ১০ থেকে ১৫ আসনের মাইক্রোবাস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকছে প্রস্তাবিত বাজেটে।
রডের ভ্যাট বৃদ্ধি
নির্মাণ শিল্পের অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে রড। রাজস্ব আদায়ে প্রস্তাবিত বাজেটে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। বর্তমানে
আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে শুল্ক-ভ্যাট ৪০ শতাংশের বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানিতে ২০–২৩ শতাংশ ও উৎপাদনে ২০ শতাংশ—বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বাতিল হতে পারে বিদ্যমান ফিক্সড আমদানি শুল্ক। তবে শুল্ককর বাড়ানো হলে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি টনে রডের দাম বাড়তে পারে প্রায় ১ হাজার ৪০০ টাকা।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে স্টিলের মূল কাঁচামাল স্ক্র্যাপ আমদানিতে প্রতি টনে ফিক্সড শুল্ক আদায় করা হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যদিকে স্টিল থেকে বিলেট ও রড উৎপাদনে প্রতি টনে ফিক্সড ভ্যাট ২ হাজার ২০০ টাকা। সবমিলিয়ে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে সরকার প্রতি টনে পাচ্ছে ৩ হাজার ৭০০ টাকা।
ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাটারিতে বাড়তি শুল্ক
ঢাকাসহ সারা দেশে বিপদজ্জনক বাহনের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশা। অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যাটারিচালিত রিকশার দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই রিকশার ১২০০ ওয়াটের ডিসি মোটরের কাস্টমস শুল্ক ১ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
মাটি ও পাতার তৈরি পণ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার
মাটির ও পাতার তৈরি তৈজসপত্রের ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব আসছে। বর্তমানে এসব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। যা বাজেটে প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যে ভ্যাট দ্বিগুণ
একবার ব্যবহারযোগ্য (ওয়ান টাইম) প্লাস্টিক পণ্যের ওপর ভ্যাট দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে চা, কফি কাপ, প্লাস্টিক প্লেট ও বাটির মতো পণ্যের ওপর ভ্যাট বেড়ে ১৫ শতাংশে পৌঁছাবে। এর ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এসব পণ্যের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত পরিবেশবান্ধব এবং প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে তৈরি পণ্যের ওপর কোনো ভ্যাট আরোপ করা হবে না। পরিবেশ সুরক্ষা এমন প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)