বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দুর্নীতির অভিযোগে এক শিক্ষকসহ আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছুটিতে থাকায় বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক হলেন- সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম সরকার। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায়বিষয়ক কমিটির সদস্য। তার বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের সময়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ অসদাচরণের একাধিক অভিযোগ ওঠে।
এসব অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সিন্ডিকেট সভায় তার বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিষয়টি এখানেই শেষ হচ্ছে না, তার বিরুদ্ধের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্বিতীয় দফা তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।
সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া অন্য কর্মকর্তা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম কিবরিয়া। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন। বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট তার বিরুদ্ধেও বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আলাদা একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছেন— অ্যাকাউন্টিং বিভাগের নিম্নমান সহকারী তানভীর আহমেদ, ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের নিম্নমান সহকারী সায়ন দাশগুপ্ত, শিক্ষকদের ব্যক্তিগত নথি শাখার নিম্নমান সহকারী পারভেজ হাসান, হিসাব নিয়ামক দপ্তরের উচ্চমান সহকারী মাহফুজুর রহমান এবং কেন্দ্রীয় স্টোর শাখার কর্মচারী উজ্জ্বল হাওলাদার ও আব্দুল মান্নান।
এদের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার ভবনে তালা দেওয়া, রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ রাখা ও অফিসে ত্রাস সৃষ্টি করার অভিযোগ ছিল।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিগত বছর যারা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ব্যবহার করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।’
শিক্ষক সাইদুল ইসলাম সরকার সম্পর্কে (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার বলেন, ‘তার (সাইদুল) বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আবার দ্বিতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই প্রতিবেদন ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী ধাপ। আর গোলাম কিবরিয়ার অভিযোগ ইতোমধ্যে প্রমাণিত। এরপরও শাস্তি কার্যকর করার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।’
তবে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক কর্মকতা জানান, ‘সাময়িক বরখাস্তের চিঠি এখনও ইস্যু হয়নি। আগামী সপ্তাহের (রোববার) ভেতর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে যাবে। চিঠিতে বরখাস্তের কারণ, তদন্ত প্রতিবেদন ও পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।’
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)