শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকাকে কোনো সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ থিঙ্কট্যাংক সংস্থা চ্যাথাম হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে এ অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্রিটিশ থিঙ্কট্যাংক সংস্থা চ্যাথাম হাউসে বুধবার বক্তব্য দেন ড. ইউনূস। সেখানে তিনি বলেন, গত এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনে প্রথম নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সরকারি সাক্ষাৎ ও কথা বলার সুযোগ ঘটেছিল তার।
“আমি যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সরাসরি কথার বলার সুযোগ পেলাম, আমি শুধু বলেছিলাম, ‘আপনি যে তাকে (শেখ হাসিনা) আশ্রয় দিতে চান— এই নীতি বাদ দেওয়ার জন্য আমি আপনার ওপর জোর-জবরদস্তি করতে পারি না; কিন্তু আমাদের অনুরোধ— তাকে চুপ থাকতে বলুন। বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্য করে তিনি যেসব কথাবার্তা বলেন, বর্তমান অবস্থান থেকে সেসব তার বলা উচিত নয়। তার কথাবার্তা বাংলাদেশের জনগণকে খুবই ক্ষুব্ধ করে তোলে।”
“আমার এ অনুরোধের জবাবে মোদি’র উত্তর ছিল— আমি কোট করছি— ‘এটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম; আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না’— এরপর আপনি আর কী বলতে পারেন। এটা একটা বিস্ফোরক পরিস্থিতি এবং আপনি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর দায় চাপিয়ে চলে যেতে পারেন না।”
শিক্ষার্থী জনতার অভ্যুত্থানের সামনে টিকতে না পেরে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে রাজধানী নয়াদিল্লিতে একটি সেফ হাউজে আছেন তিনি।
শেখ হাসিনা এবং তার দলের বিরুদ্ধে গত বছর জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনের নামে ১ হাজার ৪ শতাধিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ট্রাইব্যুনালে সেই অভিযোগের বিচারও শুরু হয়েছে।
চ্যাথাম হাউজে দেওয়া বক্তব্যে এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল থেকে শেখ হাসিনাকে তলবও করা হয়েছে। তার এতে সাড়া দেওয়া উচিত।”
“যদি তিনি সাড়া না দেন, তাহলে প্রয়োজনে আমরা ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাইব। গোটা প্রক্রিয়া যথাযথ এবং আইনানুগভাবে হবে।”
ইউনূস আরও বলেন, তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী, কিন্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ‘ভুয়া সংবাদ’।
“আমরা ভারতের সঙ্গে সেরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, কিন্তু এ ব্যাপারটি বার বার ভেস্তে যাচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে অহরহ প্রকাশ হতে থাকা ভুয়া সংবাদের কারণে। অনেকে বলছেন যে ভারতের নীতি নির্ধারকদের নির্দেশেই এসব ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারটি বাংলাদেশকে খুবই নার্ভাস করে তুলছে।”
সূত্র : ফার্স্টপোস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)