শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দফার পরমাণু আলোচনার কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। এরপরেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে খবর চাউর হয়েছে। একাধিক সূত্র সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে যে ইসরায়েল ইরানে অভিযান চালানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, মার্কিন কর্মীদের মধ্যপ্রাচ্যের ‘বিপজ্জনক’ অঞ্চলগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তা ঝুঁকির বৃদ্ধির কারণে বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে জরুরি নয় এমন কর্মী ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের ইরাক থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েল ইরানে হামলা চালালে তেহরান ইরাকে মার্কিন স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওয়াশিংটন।
এ কারণে কিছু আমেরিকানকে ওই অঞ্চল ত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তার অংশ হিসেবেই জরুরি নয় এমন কর্মী ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র পেতে পারে না, বিষয়টা একেবারে পরিষ্কার। আমরা তা কখনোই অনুমোদন করব না।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, মার্কিন কর্মীদের মধ্যপ্রাচ্যের ‘বিপজ্জনক’ অঞ্চলগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ইরাকে মার্কিন দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা কমানো হয়েছে। কুয়েত ও বাহরাইন থেকেও কিছু কর্মী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে একইদিনে ইরানের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, সংঘাত শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হবে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ বলেন, তাদের সব ঘাঁটি আমাদের আওতায় রয়েছে, আমরা সেগুলোর অবস্থান জানি। প্রয়োজনে কোনও দ্বিধা ছাড়াই সেগুলোকে লক্ষ্য করব।
তিনি বলেন, আল্লাহ চাইলে তা হবে না, আলোচনা সফল হবে। তবে যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অন্যদিকে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস উপসাগর দিয়ে জাহাজ চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে।
ইরানের সঙ্গে নতুন একটি চুক্তি করতে এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। সেই চুক্তির বিকল্প খোঁজার লক্ষ্যেই এই নতুন আলোচনা চলছে।
ট্রাম্প বুধবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি নিশ্চিত ছিলাম, কিন্তু এখন আর ততটা আত্মবিশ্বাসী নই। তারা সময়ক্ষেপণ করছে বলেই মনে হচ্ছে, যা দুঃখজনক।
তিনি আরও জানান, আলোচনার সুযোগ দিতে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা না চালাতে বলেছিলেন। কিন্তু এখন ধৈর্য হারাচ্ছেন।
বুধবার ওয়াশিংটন পোস্টের খবরেও বলা হয়েছে, ইরানে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ সতর্কতায় আছে। তবে ইসরায়েলে কবে নাগাদ হামলা চালাতে পারে- সেই সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)