মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ায় এর বিকল্প হিসেবে নতুন একটি আঞ্চলিক সংগঠন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে পাকিস্তান ও চীন। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
এ বিষয়ে ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যে আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে। উভয় দেশই মনে করছে, আঞ্চলিক সংহতি ও সংযুক্তির জন্য নতুন একটি সংগঠন সময়ের দাবি।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ছিল এই কূটনৈতিক কৌশলেরই একটি অংশ। এ বৈঠকে অংশ নেন তিন দেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকরা। এশিয়ার তিন গুরুত্বপূর্ণ দেশের এ বৈঠকটি ভারতের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
তবে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের তথ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
১৯ জুন অনুষ্ঠিত কুনমিং বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল—সার্কের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে নতুন এ জোটে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানানো।
সূত্র জানায়, ভারতকেও নতুন প্রস্তাবিত ফোরামে আমন্ত্রণ জানানো হবে, তবে ভিন্নমুখী স্বার্থের কারণে ভারত এতে ইতিবাচক সাড়া দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য দেশ এ জোটে যুক্ত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন সংগঠনের মূল লক্ষ্য হবে বর্ধিত বাণিজ্য ও যোগাযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা বাড়ানো।
যদি এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয় তবে দক্ষিণ এশিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নামে খ্যাত সার্কের কার্যক্রম পুরোপুরি থেমে যাবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
ভারত-পাকিস্তান বৈরিতার কারণে সার্ক তার ঘোষিত লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। সর্বশেষ সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এক দশক আগে। ২০১৬ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পরবর্তী সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ভারত তা বর্জন করে। সে সময় ভারতের ঘনিষ্ঠ স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারও সম্মেলন বর্জন করে।
এরপর সার্ককে পুনর্জীবিত করতে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যদিও পাকিস্তান তা আয়োজন করতে আগ্রহী ছিল।
সম্প্রতি সার্ক আরেকটি ধাক্কা খায় যখন কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কভুক্ত বিশেষ ভিসা সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়।
পাকিস্তান ও চীন গত কয়েক মাস ধরে নতুন জোট গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে আসছে। দেশ দুটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, সমমনা দেশগুলোকে এক জোট হয়ে ভবিষ্যতের জন্য পথ খুঁজতে হবে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারতের ভিন্নমুখী স্বার্থের কারণে দেশটি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থাসহ (এসসিও) অন্যান্য আঞ্চলিক জোটগুলোতেও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরপর দুটি এসসিও সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন। চীন, রাশিয়া, ইরান, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার কিছু রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত ১০ সদস্যের এ নিরাপত্তা জোটকে অনেকে পশ্চিমা বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানানোর আঞ্চলিক উদ্যোগ হিসেবেও দেখেন।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসসিওর এজেন্ডার সঙ্গে ভারতের দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)