বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মন্ত্রীরা যদি গুরুতর অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে ধারাবাহিকভাবে ৩০ দিন কারাগারে থাকেন, তবে ৩১তম দিন থেকে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদ হারাবেন। এ বিধান দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই কার্যকর হবে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার (২০ আগস্ট) সাংবিধানিক সংশোধনী বিল উপস্থাপন করেছেন। তাতে এই প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপ দুর্নীতি ও অপরাধে জড়িত রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেবে এবং জনমানসে আস্থা ফিরিয়ে আনবে।
তবে বিরোধীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মুকুল সিংভী অভিযোগ করেছেন, ‘এটি বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের হঠানোর সহজ অস্ত্র। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চালানো যাবে, অথচ শাসক দলের কোনো মুখ্যমন্ত্রী ধরা পড়বেন না।’
তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে লিখেছেন, ‘সংবিধান রক্ষার বদলে সরকার ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। কৃষক, শ্রমিক, গরিবদের উন্নয়নে যেখানে ব্যর্থ, সেখানে বিরোধীদের দমনই এখন প্রধান লক্ষ্য।’
তৃণমূলের আরেক সাংসদ মহুয়া মৈত্রর অভিযোগ, ‘মাত্র ২৪০ সাংসদ নিয়ে বিজেপি সংবিধান বদলে ফেলছে। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীদের ভুয়া মামলায় গ্রেপ্তার করে সরিয়ে দেওয়া হবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিলটি সংসদে পাস হলে ভারতের ফেডারাল কাঠামো ও বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। সরকারের যুক্তি—‘দোষী হলে তবেই পদ হারাবে’ নীতি দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের রক্ষা করছে, অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে—‘এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অচল করার চক্রান্ত।’
আজকের অধিবেশনে তীব্র হট্টগোলের মধ্যে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হতে পারে। বিরোধীরা আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে—‘প্রয়োজনে টেবিল ভাঙব, বিল ছিঁড়ে ফেলব।’ ফলে লোকসভায় আগামী কয়েকদিন উত্তাল বিতর্কের ইঙ্গিত মিলছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)