বৃহঃস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একাধিক বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ‘ই৩’ নামে পরিচিত তিন ইউরোপীয় দেশ— ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির শীর্ষ কূটনীতিকরা পারমাণবিক চুক্তির জন্য কূটনীতিতে ফিরে আসতে ইরানকে আহ্বান জানান। অন্যথায় ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে তথাকথিত ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ ব্যবস্থা প্রয়োগের হুমকি দেয় তারা।
তবে বেশ কয়েক দফার আলোচনা পরও ইরানের সঙ্গে কোনো সমঝোতা পৌঁছাতে পারেনি ই৩, অবশেষে সেই ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। এতে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু হবে।
‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা যায়। চুক্তি অনুযায়ী, পারমাণবিক কর্মসূচিতে শিথিলতার শর্তে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
২০১৫ সালে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে ইরানের বহুল আলোচিত ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ) নামের এক চুক্তি স্বাক্ষর স্বাক্ষর হয়। এতে বলা হয়, যদি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলো ইরানের ‘গুরুতর চুক্তি লঙ্ঘনের’ অভিযোগের সমাধানে ব্যর্থ হয়, তাহলে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
বৃহস্পতিবার ফরাসি, জার্মান এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে লেখা এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘২০১৯ সাল থেকে এবং আজ পর্যন্ত, ইরান ক্রমবর্ধমানভাবে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তার জেসিপিওএ চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। তারা উচ্চমানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করা, যার কোনও বিশ্বাসযোগ্য বেসামরিক যুক্তি নেই এবং পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিবিহীন একটি রাষ্ট্রের জন্য নজিরবিহীন।’
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ই৩-এর এই পদক্ষেপকে ‘অযৌক্তিক, অবৈধ এবং আইনিভাবে ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আরাঘচি বলেন, ইরান তার জাতীয় অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা এবং সুরক্ষিত করার জন্য যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।’ তবে তেহরান কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
উল্লেখ্য, যদি ইউরোপীয় দেশগুলোর এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ২০১৫ সালের চুক্তির আগে ইরানের ওপর জাতিসংঘের বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় বহাল হবে, যার মধ্যে রয়েছে প্রচলিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের ওপর বিধিনিষেধ এবং এসব দেশে ইরান সংশ্লিষ্টদের সম্পদ জব্দ করা হবে।
সূত্র: আলজাজিরা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)