রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র স্থানগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সিনাই বা মুসার পর্বত। মিসরে অবস্থিত এ পাহাড়ে মহান আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছিলেন হযরত মুসা (আঃ)।
তবে পবিত্র এ স্থানটি এখন বিলাসবহুল মেগা-রিসোর্টে রূপান্তরিত করছে মিসর। এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
এই পর্বত ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মের মানুষের কাছেও অত্যন্ত পবিত্র। বিশ্বাস করা হয় যে এখানেই হযরত মুসা ঐশ্বরিক বাণী পেয়েছিলেন। স্থানীয়রা একে ‘জাবাল মুসা’ নামে চেনেন।
বহু বছর ধরে এখানে দর্শনার্থীরা বেদুইন গাইডদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ে উঠতেন, ভোরে সূর্যোদয় দেখতেন বা অন্যান্য পদযাত্রায় অংশ নিতেন। কিন্তু এখন এই পবিত্র স্থানটিকে পর্যটকদের জন্য বিলাসবহুল গন্তব্য বানানোর পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে মিসর। যা নিয়ে অনেকেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সুবিস্তৃত মরুময় বিচ্ছিন্ন এ জায়গাটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তর্ভুক্ত। এখানে একটি মঠ, শহর এবং পাহাড় রয়েছে। কিন্তু এই স্থানটির চিত্র এখন বদলে ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে এখানে বিলাসবহুল হোটেল, ভিলা এবং কেনাকাটার জন্য বাজার তৈরি হচ্ছে।
তবে সেখানকার স্থানীয় বেদুইন সম্প্রদায়ের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এ কাজ করছে মিসর রকার। ব্রিটিশ ভ্রমণ লেখক বেন হফলার বলেছেন, “এ প্রকল্পটি বেদুইনদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা এমন কোনো উন্নয়ন নয় যা জেবেলিয়ারা (স্থানীয়রা) চেয়েছিল। বরং এটি এমন একটি প্রকল্প যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্বার্থের চেয়ে বাইরের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করছে।”
পবিত্র ওই স্থানে রয়েছে খ্রিষ্টানদের ষষ্ঠ শতাব্দির একটি মঠ। এটির সঙ্গে গ্রিসের সংযোগ রয়েছে। এ কারণেদেশটি মিসরের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার।
গত মে মাসে মিসরের একটি আদালত রায় দেন, বিশ্বের প্রাচীনতম খ্রিস্টান মঠ, সেন্ট ক্যাথেরিনস, সরকারি জমিতে অবস্থিত। এই রায়ের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়।
তবে তা সত্ত্বেও বিতর্কিত ওই পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে মিসর। সেখানে দ্রুত গতিতে তৈরি করা হচ্ছে বিলাসবহুল হোটেল-মোটেল আর রিসোর্ট।
জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট জানিয়েছেন, এই পবিত্র স্থানটির ওপর তাদের ধর্মীয় কর্তৃত্ব রয়েছে। এবং স্বয়ং হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এই মঠের জন্য একটি সুরক্ষা পত্র দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছেন বাইজেন্টাইন আমলের মঠটির ভেতর একটি ছোট মসজিদও আছে। যা ফাতেমি যুগে বানানো হয়েছিল। তিনি মসজিদটিকে “খ্রিস্টান ও মুসলিমদের মধ্যে শান্তির এক চমৎকার প্রতীক এবং সংঘাতময় বিশ্বে আশার এক আশ্রয়স্থল।” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সূত্র: বিবিসি
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)