সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার সাড়ে ৯ বছর হতে চলল। পেশাদার ক্যারিয়ারের বয়স এক যুগেরও বেশি। এই সময়ে বুমরাকে কয়েকবার চোটের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে।
মাঝে পিঠের চোটের কারণে বুমরাকে ১১ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। সেই চোট আবার ফিরে আসায় এ বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও আইপিএলের প্রথম কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। এমনও শোনা গেছে, আর একবার এ ধরনের চোটে পড়লে ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যাবে।
কিন্তু বুমরা এসব কথায় কান দেননি। চোটাঘাত নিয়ে যতবারই মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন, ততবারই রুদ্ররূপে ফেরার চেষ্টা করেছেন এবং তাতে সফলও হয়েছেন। যার সর্বশেষ প্রমাণ চলমান হেডিংলি টেস্ট।
বুমরার ৫ উইকেটের সুবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬ রানের লিড নিতে পেরেছে ভারত। শুবমান গিলের দল কাল তৃতীয় দিন শেষ করেছে ৯৬ রানে এগিয়ে থেকে, দ্বিতীয় ইনিংসে হাতে আছে ৮ উইকেট।
টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৪তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া বুমরাই দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। যাঁরা তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন, সংবাদ সম্মেলনের তাঁদের নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বুমরা।
৩১ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলার বলেছেন, ‘আমি সব সময় ভারতের হয়ে খেলতে চেয়েছি। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে সব সংস্করণেই খেলেছি। আমি সব সময় মানুষের কাছ থেকে “না” শুনে এসেছি। প্রথমে তারা বলেছিল, তুমি আর খেলতে পারবে না। তারপর তারা বলেছিল, তুমি বড়জোর ছয় মাস টিকবে। এরপর বলল, তুমি মাত্র আট মাস টিকবে। এসব শুনেই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছর (আসলে সাড়ে ৯ বছর) কাটিয়েছি। আইপিএল খেলছি ১২ থেকে ১৩ বছর ধরে।’
সংবাদমাধ্যম বা অন্যরা তাঁকে নিয়ে কী লিখছে, সেসব মাথায় নিতে চান না বুমরা, ‘মানুষ আমাকে নিয়ে কী লিখবে, সেগুলো তো আমার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই স্বাধীনভাবে লিখতে পারে। আমি বুঝতে পারছি আমাদের দেশে ক্রিকেট খুবই জনপ্রিয় এবং শিরোনামে আমার নাম ব্যবহার করলে পাঠক-দর্শক বাড়ে। কিন্তু এটা আমার কাছে কোনো ব্যাপার না। কারণ, আমি যদি এসব নিয়ে মাথা ঘামাই, তাহলে তাদের কথা বিশ্বাস করতে শুরু করব। আমাকে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং নিজস্ব উপায়েই এগিয়ে যেতে হবে। অন্যরা যেভাবে চায়, আমি সেভাবে খেলব না।’
প্রথম ইনিংসে বুমরার বলে চারটি ক্যাচ ফেলেছেন সতীর্থ ফিল্ডাররা। আরেকবার নিজে নো বল করায় উইকেট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। নয়তো ভারতের লিড আরও বড় হতে পারত।
বুমরার দুর্দান্ত বোলিং ভারতকে যেমন সাফল্য এনে দিচ্ছে, আরেক দিক থেকে দুশ্চিন্তাও বাড়াচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ভারতের বোলিং আক্রমণ অতিমাত্রায় বুমরানির্ভর। চাপ কমাতে ও চোটমুক্ত রাখতে পাঁচ টেস্টের এই সিরিজে বুমরাকে দুটি ম্যাচে বিশ্রামে রাখা হতে পারে—এমন আলোচনাও চলছে।
ভারতের বোলিং আক্রমণ অতিমাত্রায় বুমরা নির্ভর হয়ে গেছে কি না, সেই আলোচনাও চলছে
ভারতের বোলিং আক্রমণ অতিমাত্রায় বুমরা নির্ভর হয়ে গেছে কি না, সেই আলোচনাও চলছেছবি: রয়টার্স
সংবাদ সম্মেলনে বুমরা নিজেও জানিয়েছেন, তাঁর ওপর প্রত্যাশার চাপ অতিরিক্ত বোঝা হয়ে উঠতে পারে, যা তিনি বহন করতে চান না, ‘আমি রাতে নিজেকে এই প্রশ্ন করি—আমি কি মাঠে নিজের সেরাটা দিয়েছি? যদি উত্তর হয় “হ্যাঁ”, তাহলে চুপচাপ ঘুমাতে যাই।’
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)