শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় জেলের জালে ধরা পড়া ৫০ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির সেই বাঘাড় মাছটি ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাছটি ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার এক শিল্পপতি কিনেছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেল ৩টার দিকে পদ্মা নদীর কলাবাগান এলাকায় জেলে সিদ্দিকুর রহমানের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
প্রকাশ্য নিলামে ১ হাজার ৫৫০ টাকা কেজি দরে তার কাছ থেকে মাছটি প্রথমে কিনে নেন দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মো. চান্দু মোল্লা। তিনি আবার ঢাকার এক শিল্পপতির কাছে ১৬০০ টাকা কেজি দরে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
জানা গেছে, জেলে সিদ্দিকুর রহমান তার সঙ্গীদের নিয়ে দুপুরে পদ্মায় মাছ ধরতে যান। বিকেল ৩টার দিকে তাদের জালে মাছটি আটকা পড়ে। বিক্রির জন্য তিনি দৌলতদিয়া মাছ বাজারে নিয়ে যান। সেখানে রেজাউলের আড়তে মাছটি নিলামের জন্য তোলা হলে উন্মুক্ত নিলামে ১ হাজার ৫৫০ টাকা কেজি দরে ৭৭ হাজার ৫০০ টাকায় স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা মাছটি কিনে নেন।
চাঁদনী অ্যান্ড আরিফা মৎস্য আড়তের মালিক চান্দু মোল্লা বলেন, বড় বাঘাড় মাছটি নিলামে উঠলে আমি ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করি। মাছটি আমার আড়ত ঘরে এনে ফেরিঘাটের পন্টুনের সঙ্গে বেঁধে রাখি। মাছটি বিক্রির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেওয়া হলে সেটা দেখে ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার এক শিল্পপতি ৮০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন। মাছটি ডেলিভারি দেওয়া হয়ে গেছে।
বাঘাড় মাছ বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২-এর ২ নম্বর তপশিলভুক্ত একটি সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী। বিপন্ন প্রজাতির এই মাছ শিকার, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন কিংবা দখল আইনত নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইন অনুযায়ী, এসব অপরাধে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডই হতে পারে। তবে এভাবে আইনের তোয়াক্কা না করেই প্রকাশ্যে বাঘাড় শিকার ও কেনাবেচা চললেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।
মিঠাপানির মাছ বাঘাড় একটা সময় দেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ে সহজলভ্য ছিল। প্রায়ই জেলেদের জালে ধরা পড়ত। সাধারণ মানুষের কাছেও পরিচিত ও জনপ্রিয় মাছ এটি। কিন্তু অপরিকল্পিত ও নির্বিচার নিধন, নদ-নদী ভরাটসহ নানা কারণে এই মাছ বিপন্ন ও বিলুপ্তির পথে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী বন বিভাগের সহযোগী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর সাঈদুর রহমান বলেন, আমি জেলায় নতুন যোগদান করেছি। আমার আগের স্যার আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। গোয়ালন্দের সমন্বয় মিটিংয়ে এ বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু তারপরও বাঘাড় মাছ ক্রয় ও বিক্রয় হচ্ছে। আমরা বন বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনামূলক লিফলেট বিলি করবো। যদি তারপরও ক্রয় ও বিক্রয় হয় তাহলে মোবাইল কোর্ট করার চেষ্টা করবো।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)