বৃহঃস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
ফাইল ছবি
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে এক কারখানার পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার হওয়া বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবক শামীম ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোনসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শামীমের ছোট বোন রেশমা খাতুন (২৫), পাশের বাড়ির ভাবি হাফিজা খাতুন (৪২), এবং কারখানার নিরাপত্তাকর্মী গোলাম মোস্তফা (৫৫), সুমন চন্দ্র ভৌমিক (২৮), তপু সরকার (১৯) ও শফিকুল ইসলাম (৪০)।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিহত শামীমের ছোট বোন রেশমা খাতুন এসিআই ফুড কারখানায় চাকরি করতেন এবং সেখানে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মী গোলাম মোস্তফা, সুমন চন্দ্র ভৌমিক, তপু সরকার ও শফিকুল ইসলামের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এক রাতে শামীম চুরির উদ্দেশ্যে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে গিয়ে রেশমাকে নিরাপত্তাকর্মীসহ বাকিদের সঙ্গে দেখে ফেলে। এরপর বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রেশমা খাতুন পাশের বাড়ির ভাবি হাফিজা খাতুনসহ সবাইকে নিয়ে শামীমকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
তারপর ২ জুলাই রাতে শামীম ইসলামকে হাফিজা খাতুন কারখানার পাশে তার বাসায় নিয়ে যায় এবং রেশমা খাতুনকে জানায়। পরে রেশমা মাস্ক পরিহিত অবস্থায় অ্যাসিড নিয়ে আরও দুজনসহ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা এবং সুমন চন্দ্র ভৌমিক শামীমের দুই হাত ধরে রাখে এবং শফিকুল ইসলাম ছুরি দিয়ে শামীমের বুকে আঘাত করে। শেষপর্যায়ে রেশমা শামীমের ওপর অ্যাসিড ঢেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তারা লাশ কারখানার পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে রেশমা, হাফিজা, গোলাম মোস্তফা ও সুমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইন বলেন, শামীম তার বোনকে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করার সময় দেখে ফেলেছিল। তার বোনসহ বাকিরা মিলে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ৪ জন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নিহত শামীম ইসলাম কামারখন্দ উপজেলার কুটিরচর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। তিনি গত ২ জুলাই বিকেলে গোসলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। দুই দিন পর ৪ জুলাই সকাল ১০টার দিকে কুটিরচর এলাকার এসিআই ফুড কারখানার ডোবায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের গলায় গামছা পেচানো, শরীর অ্যাসিডে ঝলসানো এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এরপর বাবা সাইফুল ইসলাম কামারখন্দ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)