শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। উন্নত বিশ্বে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্বাস্থ্য গুনগত শিক্ষার অন্যতম ভিত্তি।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর ধানমণ্ডির ইউনিভার্সিটি উইমেন্স ফেডারেশন কলেজের সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জন’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম।
উপাচার্য আমানুল্লাহ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে যেসব পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তিনি আরও বলেন, মানসিকভাবে সুস্থ শিক্ষার্থীরাই পড়ালেখায় বেশি মনোযোগী হতে পারে, নতুন বিষয় দ্রুত আয়ত্ব করতে পারে এবং শেখার প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা হতাশা শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায় এবং শেখার আগ্রহ কমিয়ে দেয়, যা গুণগত শিক্ষাকে ব্যাহত করে।
তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান বিশ্বের চাহিদা মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সিলেবাস সংস্কার, আইসিটিনির্ভর শিক্ষাসহ নানাবিধ পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি ইউনিসেফ, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এবং এটুআই (এটুআই) সহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করেছে। এই চুক্তিগুলো শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়াতে এবং বৈশ্বিক শ্রমবাজারের জন্য প্রস্তুত করতে সহায়ক হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকলে তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অপরিহার্য। তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এটিকে সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে সাধুবাদ জানান।
দিনব্যাপী কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন কোর্স কো-অর্ডিনেটর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং রিসোর্স পার্সন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও মাল্টিডিসিপ্লিনারি ট্রেনিং সেন্টারের চাইল্ড সাইকোলজি বিভাগের সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ড. ফাইজা আহমেদ। সমাপনী অনুষ্ঠান তত্ত্বাবধানে ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক সালমা পারভীন।
প্রসঙ্গত, এই কর্মশালায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ইউনিভার্সিটি উইমেন্স ফেডারেশন কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ, ড. মালেকা কলেজ এবং মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজের ১৬০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)