শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি- সংগৃহীত
একটাসময় সিঙ্গারা, সমুচা, ভেজিটেবল রোল, চানাচুর মাখার মতো খাবার না হলে যেন আড্ডাই জমতো না। হোক মধ্য দুপুরের ভোজন কিংবা বিকেলের নাশতা—এসব ভাজাপোড়া খাবার ছিল সবার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। কিন্তু আজকাল এসব খাবার খাওয়ার কথা ভাবলেও যেন বুক-গলা জ্বলে। অরুচি লাগে। এসব কিন্তু হতে পারে পেপটিক আলসারের প্রাথমিক লক্ষণ।
আলসার শব্দের অর্থ ‘ক্ষত’। পেপটিক আলসার হলে পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে এই ক্ষত হতে পারে। পরবর্তীতে যা থেকে জটিলতার সৃষ্টি হয়। খাদ্যনালিতে অধিক মাত্রায় অ্যাসিড উৎপন্ন হলেই এই রোগ হয়। এ ছাড়া ‘এইচ পাইলোরি’ নামক একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকেও পেপটিক আলসার শরীরে বাসা বাঁধে।
এই সংক্রমণের ফলেই ক্ষুদ্রান্ত্রের ভেতরে আলসার দেখা দিতে পারে। তাই আলসার সম্পর্কে সচেতন হোন শুরু থেকেই। জেনে নিন, কোন কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন-
১. খেলেই পেটব্যথা
খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যদি পেটে ব্যথা করে আর সময়ের সঙ্গে তা বাড়তে থাকে তাহলে হয়তো আপনার আলসার হয়েছে। অনেকসময় দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। এসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না।
২. বুকে জ্বালা-পোড়া
বুক জ্বালা করলে অনেকেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান। ঘন ঘন এমনটা হলে কিন্তু তা আলসারের লক্ষণ হতে পারে। তাই রোজ রোজ বুকে জ্বালা-পোড়া করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩. গা গোলানো বা বমি ভাব
সারাক্ষণ গা গোলানো, বমি-বমি ভাবের সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই আলসার হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নিন। সাধারণত আলসার হলে এই উপসর্গগুলো দেখা দেয়। তাই অবহেলা করবেন না।
পরিপাকতন্ত্রের আলসার হতে পারে প্রাণঘাতী। এই রোগের কারণে খাদ্যনালিতে রক্তক্ষরণও হতে পারে। সেক্ষেত্রে বমি কিংবা মলের সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে। চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে এই আলসার থেকে সহজে মুক্তি মেলে না। পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
অনেকে মনে করেন, ঝাল-তেল-মশলাদার খাবার খেলেই বুঝি আলসার হয়। এই ধারণা কিন্তু ভুল। কেবল ঝাল বা মশলাদার খাবার আলসারের জন্য দায়ী নয়। যদি এসব খাবার রোগের তীব্রতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে।
ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাসও পরিপাকতন্ত্রে আলসারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকে সময়মতো খাবার খানা না। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে আলসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এসব উপসর্গ উপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)