সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অনেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। এ তালিকায় দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসা শেষে এবার বাড়ি ফিরলেন স্কুলটির শিক্ষিকা নিশি আক্তার।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে টানা ৩৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে তাকে ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বার্ন ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মো. মারুফুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দুর্ঘটনার পর নিশি আক্তারকে মোট ২১ বার অপারেশন থিয়েটারে নিতে হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচবার বড় ধরনের অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে তার শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে।
তিনি বলেন, যারা আগে ছুটি পেয়েছেন, তারা অপারেশন ছাড়াই সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু নিশি আক্তারের শারীরিক অবস্থার কারণে একাধিকবার অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়েছে। তিনি শক্ত মনোবল নিয়ে চিকিৎসা সহ্য করেছেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন মোট ৫৭ জন। তাদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষার্থী মারা গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ জন, যাদের মধ্যে ২-৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ডা. মারুফুল। কখনো উন্নতি, আবার কখনো অবনতি—এভাবেই চলছে তাদের অবস্থা। তবে বাকি রোগীরা ঝুঁকিমুক্ত এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ১৫ জন।
ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, বার্ন রোগীর চিকিৎসা কখনো এক হাতে হয় না। এখানে সার্জন, প্লাস্টিক সার্জন, অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট, মেডিসিন, ফিজিওথেরাপি, নিউট্রিশনসহ অনেক বিভাগ একসঙ্গে কাজ করে। অনেকে নেপথ্যে থেকে দিন-রাত পরিশ্রম করেন, যাদের নাম মানুষ শোনেও না। এই সবার মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কোনো রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব নয়।
তিনি সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রারসহ সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বের হওয়ার সময় নিশি আক্তারের চোখে ছিল একরাশ স্বস্তি। দুর্ঘটনার পর প্রথমবার পরিবারের সঙ্গে ঘরে ফিরতে পারছেন তিনি। সহকর্মী ও চিকিৎসকরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরিবারের সদস্যরা বারবার চোখের পানি মুছছিলেন, আর ডাক্তারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিলেন।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)