মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


আরাফার রোজা সৌদির হিসাবে রাখবেন নাকি বাংলাদেশের?

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত:১ জুন ২০২৫, ১১:১৩

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

প্রতি বছর জিলহজ মাসের ৯ তারিখে পালিত হয় ‘ইয়াওমে আরাফা’ বা আরাফার দিন, যা হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ দিনে রোজা রাখা সুন্নত এবং এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, এটি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফের কারণ হয়। নবীজির ভাষায়- ‘আরাফার দিনের রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি যে, তিনি আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)

তবে প্রশ্ন হলো- বাংলাদেশে অবস্থানরত মুসলমানদের জন্য আরাফার রোজা কবে রাখা উচিত—সৌদি আরবের হিসাব অনুযায়ী, নাকি বাংলাদেশের চাঁদের হিসাব অনুযায়ী? আসুন, সঠিক উত্তর জেনে নিই

ইসলামি দৃষ্টিকোণ: ইয়াওমে আরাফা মানে ৯ জিলহজ
ইয়াওমে আরাফার তারিখ নিয়ে কারো কারো ভিন্নমত থাকলেও নির্ভরযোগ্য ইসলামি স্কলারদের ব্যাখ্যানুযায়ী, ইয়াওমে আরাফা একটি নির্দিষ্ট তারিখের নাম, যা হলো জিলহজের নয় তারিখ। এটি কোনো নির্দিষ্ট স্থানের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। যেমন, ইয়াওমুন নাহার (কোরবানির দিন) হলো দশ জিলহজ। আর হাদিস অনুযায়ী, ইয়াওমে আরাফার পরের দিনই ইয়াওমুন নাহার, যার মাঝখানে কোনো গ্যাপ নেই। মক্কার অনুসরণে কেউ আরাফার দিন পালন করার পর যদি দেখে যে, তাদের কোরবানি ও আরাফার দিনের মাঝে একদিনের গ্যাপ রয়ে গেছে, তাহলে সেটি হবে সরাসরি ইজমার খেলাফ। তাই, আরাফার দিন মানে জিলহজের নয় তারিখ এবং এটি প্রতিটি দেশের নিজস্ব চাঁদের হিসাব অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।

ইসলামি শরিয়তে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য স্থানীয় চাঁদের হিসাব অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করার নির্দেশনা রয়েছে। সৌদি আরবের চাঁদের হিসাব অনুসরণ করা আবশ্যক নয়। প্রত্যেক দেশের মুসলমানদের উচিত তাদের নিজস্ব চাঁদের হিসাব অনুযায়ী ইবাদত পালন করা, যেন কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। বিজ্ঞ মুফতিরা চেষ্টা করবেন- জাতীয় হেলাল কমিটির মাধ্যমে সঠিক মাসয়ালা অনুসারে দেশের সব মানুষকে একটি শরয়ি সিদ্ধান্তে একত্র করার। তা নিয়ে যেন এলাকাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতা তৈরি না হয়। (আলবাহরুর রায়েক: ২/২৬৬; রদ্দুল মুহতার: ২/৩৮৯; আহসানুল ফতোয়া: ৪/৪৬৬; ফতোয়ায়ে উসমানি: ২/১৬৭-১৬৮, ১৭২)

অতএব, বাংলাদেশে অবস্থানরত মুসলমানদের জন্য আরাফার রোজা পালন করতে হবে বাংলাদেশের চাঁদের হিসাব অনুযায়ী ৯ জিলহজ তারিখে। সৌদি আরবের চাঁদের হিসাব অনুসরণ করে রোজা রাখা শরিয়তসম্মত নয়। তাই, স্থানীয় চাঁদের হিসাব অনুযায়ী ইবাদত পালন করাই সঠিক ও শরিয়তসম্মত।

সৌদি আরবে ২০২৫ সালের আরাফার দিন হলো ৫ জুন (৯ জিলহজ), বৃহস্পতিবার। পরদিন শুক্রবার ইয়ামুন নাহার বা কোরবানির দিন (১০ জিলহজ)। আর বাংলাদেশে আরাফার দিন হলো ৬ জুন (৯ জিলহজ), শুক্রবার। আর বাংলাদেশে কোরবানি হবে ৭ জুন, শনিবার।

বাংলাদেশের মুসলিমরা কত তারিখ ইয়াওমে আরাফার রোজা রাখবেন
বাংলাদেশের মুসলিমরা বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দিবাগত রাতের শেষদিকে সাহরি খাবেন এবং পরদিন শুক্রবার (৬ জুন) ইয়াওমে আরাফার রোজা রাখবেন। আবার কেউ চাইলে বেশি সওয়াব লাভের জন্য দুটি রোজাও রাখতে পারেন। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৩:৪৫ ভোর
যোহর ১১:৫৭ দুপুর
আছর ০৪:৩৬ বিকেল
মাগরিব ০৬:৪৬ সন্ধ্যা
এশা ০৮:০৮ রাত

মঙ্গলবার ৩ জুন ২০২৫