শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
আজ ১৪৪৭ হিজরি সনের ২ মহররম। ইসলামের দৃষ্টিতে মহররম সম্মানিত চার মাসের একটি। রাসূল (সা.) বলেন, ‘আসমান-জমিন সৃষ্টিলগ্ন থেকে সময় তার মতো করে চলছে। বছরে ১২ মাসের চারটি সম্মানিত মাস। ধারাবাহিকভাবে তিনটি: জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। চতুর্থটি হলো রজব।’ (বুখারি ৩১৯৭)
কুরআন-হাদিসের বিশেষজ্ঞ মুফাসির ও মুহাদ্দিসদের মতে, ইসলামের দীর্ঘ ইতিহাস-ঐতিহ্য ও রহস্যময় তাৎপর্য নিহিত আছে এ মাস ঘিরে। এ ঘটনার বিবরণে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) হিজরত করে মদিনায় পৌঁছে মদিনার ইহুদিদের আশুরার দিনে (১০ মহররম) রোজা পালন করতে দেখেন।
নবীজি তাদের জিজ্ঞেস করেন, এ দিনে কী ঘটেছে যে তোমরা এতে রোজা পালন কর? তারা বলে, এই দিনটি অনেক বড় দিন, এ দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও তার সঙ্গীদের ফিরাউন থেকে মুক্ত করেছিলেন এবং ফিরাউন ও তার বাহিনীকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন।
এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মুসা (আ.) রোজা রাখতেন, তাই আমরাও আশুরার রোজা পালন করে থাকি। ইহুদিদের জবাব শুনে নবীজি (সা.) বলেন, মুসা (আ.)-এর কৃতজ্ঞতার অনুসরণে আমরা তাদের চেয়ে বেশি যত্নশীল হওয়ার অধিকারী। অতঃপর তিনি নিজেও আশুরার রোজা রাখেন এবং মুসলমানদের তা পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। (বুখারি: ৩৩৯৭)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, বিধর্মীরা তো এই দিনটিকে বড় দিন মনে করে। এই দিনে তারাও রোজা পালন করে। আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি তাহলে তো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে।
তাদের প্রশ্নের জবাবে নবীজি (সা.) বলেন, তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে, (তাহলে আমরা) আগামী বছর ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করব, ইনশাআল্লাহ। (মুসলিম: ১১৩৪)
অন্য হাদিসে এসেছ, তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য ১০ তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরও একটি রোজা রেখে নিও। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৪)
উপরোক্ত হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, আশুরার রোজা দুটি রাখতে হবে। মহররমের ১০ তারিখ একটি, আর মহররমের ৯ তারিখ অথবা পরের দিন মহররমের ১১ তারিখ একটি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)