মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
নেত্রকোনায় এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
সেইসাথে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ডক্টর এ কে এম এমদাদুল হক এ রায় দেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলা সদরের ঠাকুরকোনা গ্রামের কাজল চন্দ্র সরকারের ছেলে অপু চন্দ্র সরকার (২৭), আব্দুর গফুরের ছেলে মামুন (২৮) ও একই গ্রামের মৃত মিয়াচানের ছেলে সুলতান (৩০)।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. নূরুল কবীর রুবেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সনের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঠাকুরাকোনা রেল লাইনের পাশে থাকা রিকশাচালক লালচান মিয়ার ১৪ বছর বয়সী কিশোরী কন্যা পান্নাকে ডেকে নিয়ে পাশের মাছের খামারের ঘরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ওই তিনজন।
পরিবার সদস্যরা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে খামার থেকে পান্নাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। পরে আসামিরা পরিবারটিকে বিষয়টি ধামাচাপার জন্য হুমকি দেয়। এ ঘটনায় এদিন রাতেই লজ্জায় ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে পান্না। পরদিন সকালে পান্নার ঝুলন্ত লাশ পাশের আরেকটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পান্নার মা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়। পরে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে বাধ্য করে।
এ ঘটনা এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে। পরে আদালতের নির্দেশে ১০ সেপ্টেম্বর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত করা হয়। এতে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে আসামি অপু ও মামুনকে ১২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর আসামি খামার মালিক সুলতান মিয়াকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এ মামলায় ওই তিনজনকের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল আদালতে পুলিশ চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করে। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এ রায় দেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. নূরুল কবীর রুবেল বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় ওই তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আর আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)