বৃহঃস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২


কোরআনে কল্যাণের পথে অগ্রগামী বলা হয়েছে যাদের

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত:২১ আগষ্ট ২০২৫, ১১:১৯

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

মানুষ পৃথিবীতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এসেছে। নির্দিষ্ট সময় পরেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে। এরপর মৃত্যু কবর, কিয়ামত, পুলসিরাত পেরিয়ে শুরু হবে অনন্ত জীবন। এই শেষ হবে না। কেউ হয়তো অনন্তকাল জান্নাতে থাকবে। আবার কেউ অন্ততকাল জাহান্নামে।

পরকালে জান্নাত বা জাহান্নামে স্থান লাভের জন্য দুনিয়াতেই আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। তার নির্দেশিত জীবন বিধান মানতে হবে। পৃথিবীর প্রয়োজন পূরণ করে এবং এই প্রয়োজন পূরণের সঙ্গে সঙ্গেই আখেরাতের জীবন নিয়ে ভাবতে হবে ও এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই দুনিয়ার জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। দুনিয়ার জীবনের ভালোমন্দ নিয়ে ভেবেই সময় কাটিয়ে দেয়। তবে কিছু কিছু মানুষ আছেন বিপরীতধর্মী। তারা দুনিয়ার জীবনের পাশাপাশি আখেরাত নিয়েও ভাবেন। ঈমান, আমল, ইবাদত করার পরেও শঙ্কায় থাকেন কোনে কারণে যেন আল্লাহ তায়ালার দরবারে তাদের আমল নষ্ট হয়ে না যায় এবং প্রতিদান দিবসে তারা যেন বঞ্চিত না হন।

এমন ব্যক্তিদের পবিত্র কোরআনে কল্যাণের পথে অগ্রগামী বলা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে—

وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡتُوۡنَ مَاۤ اٰتَوۡا وَّ قُلُوۡبُهُمۡ وَجِلَۃٌ اَنَّهُمۡ اِلٰی رَبِّهِمۡ رٰجِعُوۡنَ اُولٰٓئِكَ یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ وَ هُمۡ لَهَا سٰبِقُوۡنَ

যারা তাদের দানের বস্তু দান করে আর তাদের অন্তর ভীত শংকিত থাকে এ জন্যে যে, তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে। তারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তারা তাতে অগ্রগামী হয়। (সুরা আল মুমিনুন, আয়াত : ৬০-৬১)

অর্থাৎ, এই লোকেরা যাবতীয় নেক কাজ করে যেমন নামাজ আদায়, যাকাত প্রদান, সদকা প্রদান, হজ ও দান সবই করে। কিন্তু তার পরও তারা ভীত থাকে যে পরকালে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে তাই সেখানে যেন আমল নষ্ট না হয়।

তারা দুনিয়ায় আল্লাহর ব্যাপারে ভীতি শূন্য ও চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করে না। যা মনে আসে তাই করে না। বরং তাদের মন সবসময় আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে। তারা আরও ভয় করে যে, আমরা আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক দেয়ার পরও তা আমাদের থেকে কবুল করা হচ্ছে কি না?

আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই আয়াতের মর্ম জিজ্ঞেস করে বললাম যে, এই কাজ করে যারা ভীত কম্পিত হবে তারা কি মদ্যপান করে কিংবা চুরি করে?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না হে সিদ্দীক তনয়! বরং এরা ওই সমস্ত লোক যারা রোজা পালন করে, নামাজ আদায় করে। এরপরও তারা শঙ্কিত থাকে যে, সম্ভবত, আমাদের এই আমল আল্লাহর কাছে (আমাদের কোন ক্রটির কারণে) কবুল হবে না। এ ধরনের লোকই সৎকাজ দ্রুত সম্পাদন করে এবং তাতে অগ্রগামী থাকে (তিরমিজি, হাদিস : ৩১৭৫)

হাসান রহ. বলেন, আমি এমন লোক দেখেছি। যারা সৎকাজ করে ততটুকুই ভীত হয় যতটুকু তোমরা মন্দ কাজ করেও ভীত হও না। (কুরতুবী)

মুফাসসিরগণ তাদের অন্তর ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন—

আল্লাহ সব কিছু জানেন

তাদেরকে যা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা তারা দেয়া সত্বেও ভয় পায় যে, তাদেরকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে তিনি প্রত্যেকের যাবতীয় গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় জানেন। তাই তাদের দান যথাযোগ্য পন্থায় হয়েছে কি না সে ভয়ে তারা ভীত।

আল্লাহর কাছে ফিরে যাবার ভয়

অথবা, তারা তাদের প্রভুর কাছে ফিরে যাবার কারণেই ভয় করছে, কারণ তার কাছে কোন কাজই গোপন নেই। যে কোন ভাবেই তিনি ইচ্ছা করলে পাকড়াও করতে পারেন।

আল্লাহর কড়া হিসাবের ভয়

তারা যে কাজ করার তা করে, তারপর তারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রব-এর কাছে ফিরে যেতে হবে ফলে তিনি তাদের কাজের হিসাব নিবেন। আর যার হিসেব কড়াভাবে নেয়া হবে তার ধ্বংস অনিবাৰ্য।

ডিএস /সীমা

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:১৭ ভোর
যোহর ১২:০২ দুপুর
আছর ০৪:৩৬ বিকেল
মাগরিব ০৬.৩০ সন্ধ্যা
এশা ০৭:৪৬ রাত

বৃহঃস্পতিবার ২১ আগস্ট ২০২৫