শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামীকাল রোববার ঢাকায় আসছে দেশটির বাণিজ্য দপ্তরের একটি প্রতিনিধিদল। তিন দিনের এই সফরে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, তিন দফা আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের পাল্টা শুল্কহার চূড়ান্ত হয়েছে। শুল্কহার চূড়ান্ত হলেও দুই পক্ষের মধ্যে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। চুক্তির একটি খসড়া হলেও কিছু বিষয়ে আলোচনা বাকি রয়েছে। মূলত এসব বিষয়ে আলোচনা শেষ করে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার কথা এই সফরে।
খসড়া সূচি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি আগামী সোমবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া মার্কিন প্রতিনিধিদলটির সদস্যরা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটির।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, যেসব ইস্যুতে আলোচনা শেষ হয়নি, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রুলস অব অরিজিন, কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে জিএম ফুড, যুক্তরাষ্ট্রের কোন কোন পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে, তার পুরো তালিকা ইত্যাদি। এর পাশাপাশি ডিজিটাল বাণিজ্য ও মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরি, শিল্প খাতে টেকসই উন্নয়ন, শ্রমিকদের সুরক্ষা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের অবাধ প্রবেশাধিকারের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব পান গত ২১ জানুয়ারি। এর ২ মাস পর গত ২ এপ্রিল বিশ্বের ৭০ দেশের পণ্যের জন্য বিভিন্ন হারে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন তিনি। অনেকেই ট্রাম্পের এ ঘোষণাকে একধরনের ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ বলে সমালোচনা করেছেন।
প্রথমে গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপ করা হয় ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক। তবে এ ঘোষণা তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়। পরে ৮ জুলাই তা কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। নতুন পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ করায় মোট শুল্কহার দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশ।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)